ভদ্রলোকের খেলার আদি স্থান ইংল্যান্ডে হলেও এশিয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ায় এই খেলার জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী। দীর্ঘ ২০০ বছর ব্রিটিশদের অধীনে থাকায় ক্রিকেট ভারতীয় উপমহাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ক্রিকেট খেলুড়ে প্রধান দশটি দেশের মধ্যে চারটি দেশই দক্ষিণ এশিয়ার। ভারত এবং পাকিস্তানে ক্রিকেট এক আবেগের নাম, ধর্মীয় আবেগের পর ক্রিকেটই দুই দেশে সবচেয়ে শক্তিশালী প্রভাবক আবেগের ক্ষেত্রে। আজকে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার সেরা পাঁচটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম নিয়ে আলোচনা করবো।
১) এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়াম, চেন্নাই, ভারত
দক্ষিণ ভারতের প্রধান ক্রিকেট স্টেডিয়াম এমএ চিদাম্বারাম স্টেডিয়াম, চেন্নাই। এর ধারণ ক্ষমতা প্রায় ৫০০০০ হাজারেও বেশি। ১৯৮৭ সালে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ওডিআই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় এই মাঠে। আইপিএলের টিম চেন্নাই সুপার কিংসের ঘরের মাঠ এই স্টেডিয়াম। এই স্টেডিয়ামের স্বাগতিক দর্শকেরা "ইয়েলো আর্মি" নামে পরিচিত কারণ চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচে দর্শকেরা সবাই "ইয়েলো জার্সি" পরিধান করে। ১৯১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি নানা ঐতিহাসিক ঘটনার সাথে জড়িত। ভারত এবং অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ম্যাচের মধ্য দিয়ে এই স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর যাত্রা শুরু করে।
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় টাই ম্যাচের স্বাক্ষী এই স্টেডিয়াম। এছাড়াও ২০০১ সালে এই মাঠেই ভারত অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জয় লাভ করে।
২) গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, গল, শ্রীলঙ্কা
গল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি শ্রীলঙ্কার প্রধান স্টেডিয়াম। এর ধারণক্ষমতা প্রায় ৩৫০০০। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এই স্টেডিয়ামটি বিখ্যাত। তবে ২০০৪ সালে সুনামির কারণে এই স্টেডিয়ামটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে পরবর্তীতে পুনর্গঠনের ফলে ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয় স্টেডিয়ামটি। ১৮৭৬ সালে দৌড় প্রতিযোগিতার উদ্দেশ্যে স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয় এবং ১৯২৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। লংকান গ্রেট মুত্তিয়া মুরালিধরন এই স্টেডিয়ামে তার ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলেন।
৩) গাদ্দাফি স্টেডিয়াম, লাহোর, পাকিস্তান
পাকিস্তান ক্রিকেটের নিউক্লিয়াস হিসেবে খ্যাত গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের দর্শক ধারণক্ষমতা প্রায় ৬০ হাজার। দর্শক ধারণক্ষমতা বিবেচনায় স্টেডিয়ামটি উপমহাদেশের অন্যতম বৃহৎ স্টেডিয়াম। ১৯৫৯ সালে পাকিস্তান বনাম অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট ম্যাচের মধ্য দিয়ে এই স্টেডিয়ামটি আত্মপ্রকাশ করে। শুরুতে স্টেডিয়ামটির নাম ছিলো লাহোর ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ১৯৭৪ সালে দ্বিতীয় ইসলামী সম্মেলনে সাবেক লিবীয় নেতা কর্নেল মুয়াম্মর গাদ্দাফির পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্র উদ্ভাবনের অধিকার থাকার মন্তব্যের পর তাঁর সম্মানার্থে নাম পরিবর্তিত হয়ে বর্তমান নামে পরিচিতি পাচ্ছে। ১৯৯৬ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া ১৯৯০ হকি বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচটিও এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
৪) ইডেন গার্ডেন, কোলকাতা, ভারত
১৮৬৪ সালে কলকাতায় ইডেন গার্ডেন স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করা হয়। তবে প্রথম ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩৪ সালে। গত দশকেও সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের খেতাব ছিলো স্টেডিয়ামটির। তবে সংস্কারের কারণে ধারণক্ষমতা কমে আসে ৬৬ হাজারে। কোলকাতা নাইট রাইডার্সের হোম গ্রাউন্ড এই স্টেডিয়াম।
৫) শের-ই বাংলা ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম, ঢাকা, বাংলাদেশ
২০০৬ সালে ক্রিকেট স্টেডিয়াম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে শের-ই বাংলা ন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামটি। শুরুতে এর নাম ছিলো মিরপুর ক্রিকেট স্টেডিয়াম তবে পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার নাম পরিবর্তন করে শের-ই বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম রাখে।
হোম অব ক্রিকেট নামে পরিচিত এই স্টেডিয়াম। ২০১১ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্ভোধনী ম্যাচটি এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সিরিজের অধিকাংশ ম্যাচ এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়।
রিলেটেড পোস্ট / আরো পড়ুন
Subscribe to our newsletter
Join our monthly newsletter and never miss out on new stories and promotions.